skip to Main Content
+8801825403232 info@fakhanfoundation.com

নোটিশ: এফ. এ. খান ফাউন্ডেশন আয়োজিত এফ. এ. খান স্মৃতি বৃত্তি পরীক্ষা ২০১৯ এর ফলাফল ঘোষনা ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান আগামী ২০-০১-২০২০ ইং তারিখ বিকাল ৩:০০ টায় জয়দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।

তৎকালিন বৃহত্তম ময়মনসিংহের তেমনি এক গর্বিত সন্তান প্রয়াত ফকির আহমদ খান (এফ.এ.খান ) বি,এল । আজ জনাব ফকির আহমদ খান আমাদের মাঝে নেই । ১৯৬৯ সালের ২৫ শে মে তিনি এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেও ময়মনসিংহ বাসী মানুষের হৃদয় থেকে বিস্মৃত হননি । বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার জনসাধারণ তাঁকে আজও স্মরণে রেখেছে । মানুষ অবিনশ্বর নয় । সবাইকে এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হবে । জনাব ফকির আহমদ খানকেও বিদায় নিতে হয়েছে । কিন্তু মানব কল্যানে নিবেদিত প্রাণ এই নিরহংকারী প্রিয় মানুষটিকে বৃহত্তর ময়মনসিংহ বাসী আজও ভুলতে পারেনি । ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানার অর্ন্তগত আয়মান নদীর তীরে ময়মনসিংহ – টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে প্রাকৃতিক নিসর্গভুমি মধুপুরের বনাঞ্চল থেকে ১২ কিলোমিটার পূর্বে জয়দা আদর্শ গ্রামের অবস্থান । জনাব ফকির আহমদ খান (বি,এল) ১৯০২ সালে এই জয়দা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন । তিনি ছিলেন জনাব আহমদ আলী খান এবং নজমুন্নেসা খাতুন এর একমাত্র সন্তান । পিতা জনাব আহমদ আলী খান ছিলেন তখনকার দিনে একজন সংস্কৃতিমনা সম্মানিত ব্যক্তি । সাহিত্যের প্রতি ছিল তার গভীর অনুরাগ । তাঁর রচিত ”কলির ভঙ্গী” সেই সময়ের একটি আলোচিত গ্রন্থ। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন আদর্শবাদী পিতা। একমাত্র ছেলে ফকির আহমদ খানকে তিনি শিক্ষাদীক্ষায় দেশের একজন আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট ছিলেন । পিতার এ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়নি । জনাব ফকির আহমদ খান কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯১৯ সালে মেট্রিকুলেশন এবং ১৯২১ সালে আই, এ, পরীক্ষায় উত্তীর্ন হন। এরপর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য কলিকাতায় গমন করেন এবং ১৯২৩ সালে তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিতের সাথে বি.এ, পাশ করেন । ১৯২৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এল,এল,বি পাশ করেন । সেই সময়কার অত্যন্ত প্রতিভাবান ও বিজ্ঞ আইনজীবি হওয়া সত্ত্বেও তিনি আইনপেশা বাদ দিয়ে সমাজ সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি বেঙ্গল সিভিল সাভিস পরীক্ষায়ও অত্যন্ত কৃতিত্তের সাথে উর্ত্তীন হন । বাংলা ইংরেজী ভাষার পাশাপাশি তিনি ফার্সি ভাষায়ও ছিলেন খুবই পারদর্শী । শিক্ষাজীবন শেষে ফকির আহমদ খান ইচ্ছে করলেই সরকারী উচ্চ পদে আসীন হয়ে শহরে বিলাসী জীবন কাটাতে পারতেন । কিন্তু তিনি তা করেননি । নিজ গ্রাম জয়দার মানুষের প্রতি ছিল তাঁর গভীর মমত্ববোধ । গ্রামে এসে স্থানীয় জনগনের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে মনস্থির করেন । সমাজ সেবার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তিনি জয়দা প্রাইমারী বিদ্যালয় এবং ঈদগার জন্য জমি দান করেন। জনাব ফকির আহমদ খান ১৯৩২ সালে ইউনিয়ন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৩২ সাল থেকে ১৯৬২ সাল পযন্ত একটানা ত্রিশ বছর জনাব ফকির আহমদ খান বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় স্থানীয় বাঁশাটী ইউনিয়ন কাউন্সিলের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হয়ে সুনামের সংগে দায়িত্ব পালন করে গেছেন । শারিরীক ভাবে অসুস্থ হওয়ার পর তিনি ১৯৬২ সালে স্বেচ্ছায় এ দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৬১ সালে জয়দা ”আদর্শ গ্রাম” নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রেও তার ভূমিকাই ছিল প্রধান। ইউনিয়ন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ছাড়্ওা তিনি ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ডের মেম্বার এবং জাতীয় জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন । জনাব ফকির আহমদ খান ইউনিয়ন কাউন্সিলের শ্রেষ্ঠ প্রেসিডেন্ট হিসেবে একাধিক বার রাষ্ট্রীয় পুরস্কারে ভূষিত হন । সমাজসেবী এবং শিক্ষানুরাগী হিসেবে ফকির আহমদ খানের পরিচিতি শুধু তার এলাকাতেই সীমাবদ্ধ ছিলনা। বৃহত্তর ময়মনসিংহের মানুষ তার কাজে উদ্বুদ্ধ হতো । তাদের কাছে তিনি ছিলেন অনুকরনীয় ব্যক্তিত্ব। জনাব ফকির আহমদ খান ১৯৬৯ সালের ২৫ মে মৃত্যু বরন করেন।

Back To Top